২০১৪ সালের ২৬ নভেম্বর আনুষ্ঠানকিভাবেই বিচ্ছেদ হয়েছে বাঁধন ও মাশরুর সিদ্দিকীর। দীর্ঘদিন এ ঘটনা চেপে রেখেছিলেন বাঁধন ও তার স্বামী, সম্প্রতি মাশরুরের গোপন বিয়ে ও মেয়েকে নিজের কাছে রাখার জন্য বিষয়টি নিয়ে মুখ খোলেন বাঁধন।
নিজের বয়সের থেকে প্রায় বিশ বছরেরও বড়ি তার স্বামী মাশরুর সিদ্দিকী সনেট। বাঁধনের ভাষায়, আমার মা আমার চেয়ে ১৭ বছরের বড়। আর সনেট ছিলো আমার মায়ের থেকেও বড়। স্রেফ সার্টিফিকেটেই আমার চেয়ে বিশ বছরের বড় সে। তবুও তাকে বিয়ে করেছিলাম ভালোবেসেছিলাম বলে। মনে হয়েছিলো সে একজন সুখী সংসারী মানুষ হবে। কিন্তু সেই ধারণা আমার ভুল ছিলো।
এদিকে স্বামী ও স্ত্রী দুজনের কাছ থেকে ডিভোর্সের কারণ হিসেবে পাওয়া গেল আলাদা আলাদা অভিযোগ। তবে কেন্দ্রবিন্দু একটাই। সেটি ছিলো আর্থিক সমস্যা। সনেট ডিভোর্সের কারণ সম্পর্কে বলেন, বিয়ের পর আমি বাঁধনকে নিয়ে গুলশানে উঠি। সেটি ছিলো আমার ভাড়া বাসা। আমি বুঝতে পারিনি তখনও আমি একটা কৌশলী মেয়ের ফাঁদে পড়েছি। কিছুদিন যেতে না যেতেই বললো, আমি আর অভিনয় করবো না। প্রতি মাসে আমাকে ১ লাখ টাকা হাত খরচ দিতে হবে। আমি বললাম, অভিনয় করবে না কেন? তুমি অভিনেত্রী বলেই তোমাকে আমার ভালো লেগেছিলো। অভিনয়টা চালিয়ে যাও। আর সংসার তো আমি চালাচ্ছিই। তোমার সব চাহিদাও মেটাচ্ছি। যকন যতো টাকা লাগে দিচ্ছি। তবে প্রতি মাসে আলাদা করে ১ লাখ টাকা কেন দিতে হবে? উত্তরে সে বললো, এটা তার লাগবেই। এ নিয়ে কথা কাটাকাটি হয় দুজনের মধ্যে। সে থেকেই ঝামেলার শুরু।
তিনি বলেন, বাঁধন প্রচণ্ড লোভী একটি মেয়ে। ও ভেবেছিলো আমি বিরাট শিল্পপতি। টাকা দিয়ে আমি ওকে মুড়িয়ে রাখবো। এজন্যই সে আমাকে বিয়ে করেছিলো ফাঁদে ফেলে। কিন্তু আদতে অতোবড় শিল্পপতি বা কিছু আমি নই। দীর্ঘদিন আর্মিতে চাকরি করেছি। যা কিছু সঞ্চয় করেছি তাতে কিছু ব্যবসা করে মধ্যবিত্ত জীবন যাপন করার চেষ্টা করি। কিন্তু বাঁধন যখন বিয়ের পরে দেখলো আমি ওর স্বপ্নের মতো নই তখন থেকেই ও হতাশ। প্রতি মাসে ১ লাখ টাকা চায়, আমার ব্যবসায়ে পার্টনারশিপ চায়। আমি বলতাম যা কিছু আমার সবই তো তার। সে বিশ্বাস করতো না। সে আসলে খুবই লোভী।
বাঁধন বলেন, ওর পরিবার ছাড়া কেউই এই মেয়েটাকে পছন্দ করে না। ওর আত্মীয়দের সঙ্গে আপনারা যোগাযোগ করুন, জানতে পারবেন বাঁধন মানুষ হিসেবে কতোটা নিচু মানের। মিডিয়াতেও অনেকে বাঁধনের বিষয়ে জানে। আমার কাছে অনেক অভিযোগই এসেছে বিয়ের পর। আমি পরে জেনেছি আগেও সে একটি বিয়ে করেছিলো। সেই সংসার থেকে অনেক অর্থকড়ি নিয়ে চলে এসেছিলো। মেয়েটাকে বিয়ে করার আগে বুঝতেই পারিনি ও এমন হতে পারে। যখন ও বাচ্ছা নিলো দ্রুত, ভেবেছিলাম সংসারটা মন দিয়ে করবে। কিন্তু সে আর হলো কই। টাকা পয়সা নিয়ে সবসময়ই আক্ষেপ করতো, লোভ করতো। আর তা নিয়েই হতো বিরোধ।
এদিকে বাঁধন বললেন সম্পূর্ণই ভিন্ন কথা। তিনি দাবি করেন, আমি কখনোই সনেটকে শিল্পপতি ভাবিনি, সেসব ভেবে বিয়েও করিনি। এটা আমাদের চারপাশের সবাই জানে। ও আসলে ব্যার্থ একজন পুরুষ ও স্বামী। সংসার চালাতে সমর্থ ছিলো না। মাসের ১৫ তারিখ যেতে না যেতেই বলতো হাতে টাকা নেই। সংসারটা কীভাবে চলে? আমাকে বলতো অভিনয় করো। কিছু টাকা আসবে। খুব রাগ লাগতো তখন। আসলে ও টাকা রাখতে পারতো না। তাই আমি বলতাম, টাকা আমার হাতে দেবে। আমি খরচ করবো। যেকোনো স্ত্রীই এটা বলতে পারে যদি সেই মেয়ে জানতে পারে যে তার স্বামী সংসার চালাতে অক্ষম।
আগের বিয়ে প্রসঙ্গে বাঁধন বলেন, ও প্রচণ্ড মিথ্যেবাদী একটা লোক। ওকি জানতো না যে আমার আরেকটা বিয়ে হয়েছিলো ওর আগে। অবশ্যই জানতো। কেননা, আমি নিজে তাকে সেটি বলেছিলাম। আমি একজন অভিনেত্রী। চাইলেও নিজের জীবেনর গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো লুকাতে পারি না। কোনো না কোনোভাবে জেনেই যায় সবাই। এই যে আমি এত চেষ্টা করলাম বিচ্ছেদ লুকিয়ে রাখতে মেয়ের মুখের দিকে চেয়ে, সেটি কী পেরেছি। পারিনি। তবে কেন বিয়ের কথা লুকাবো আমি। নিজে ওকে বলেছিলাম আগের বিয়ের কথা। আমাদের বিয়ের পর গণমাধ্যমে নিউজও হয়েছে আমার ও সনেটের- দুজনেরই এটি দ্বিতীয় বিয়ে। সে ভুলে গেলেও পত্রিকার আর্কাইভে কিন্তু রয়ে গেছে সব।