কোটা ব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে আজ সোমবার বিকেলে আন্দোলনরত বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার পরিষদের ২০ জন প্রতিনিধির সঙ্গে সচিবালয়ে বৈঠক করে আওয়ামী লীগের একটি প্রতিনিধিদল। বৈঠক শেষে আন্দোলন স্থগিত করার ঘোষণা দেন পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন।
তবে এই ঘোষণা মানছেন না আন্দোলনকারীরা। তাদের দাবি, দ্রুতই সরকারকে কোটা সংস্কারের দাবি মেনে নিতে হবে। একইসঙ্গে আটককৃতদের ছেড়ে দিতে হবে।
কোটা সংস্কার আন্দোলন আগামী মে মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত স্থগিত করার ঘোষণা দিয়েছিলেন নেতারা। তবে এই দাবি মানছেন না ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় অবস্থানরত কয়েক হাজার আন্দোলনকারী।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি ও টিএসসি থেকে শাহবাগমুখী সড়কে এরই মধ্যে অবস্থান নিয়েছে আন্দোলনকারীরা। তারা মিছিল করছে, স্লোগান দিচ্ছে। কংক্রিটের বিশাল পাইপ সংগ্রহ করে রাস্তার ওপর রেখেছে যাতে পুলিশ ক্যাম্পাসে ঢুকতে না পারে।
এর আগে সচিবালয় থেকে ২০ প্রতিনিধি ফিরে এসে তাঁদের সিদ্ধান্তের বিষয়ে জানালে আন্দোলনকারীরা তাদের উদ্দেশে, ভুয়া ভুয়া বলে স্লোগান দেয়।
আন্দোলন স্থগিতের সিদ্ধান্ত শোনার সঙ্গে সঙ্গে ‘মানি না, মানি না’ বলে চিৎকার করে আন্দোলনকারীরা।
প্রতিনিধিরা তখন বলতে থাকে, ‘আপনারা যদি আমাদের সিদ্ধান্ত না মানেন তাহলে আমরা কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে সরে যাব।’
হাসান আল মামুন বলেন, ‘এক মাসে দুই বার প্রধানমন্ত্রী দেশের বাইরে থাকবেন, কেবিনেট মিটিংয়ে আলোচনাটা দেরি হবে বিধায় এক মাস পেছানো হচ্ছে। এক মাসের মধ্যে দাবি আদায়ে কার্যকরী সিদ্ধান্ত না হলে প্রয়োজনে আগামী ৭ মে থেকে ফের আন্দোলন।’
সেতুমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুনের নেতৃত্বে বৈঠকে ২০ সদস্য অংশ নেয়। আজ সোমবার সেতু মন্ত্রণালয়ের কনফারেন্স রুমে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে এ বৈঠক শুরু হয়। বৈঠকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, এনামুল হক শামীম, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আফজাল হোসেন, সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, মুক্তযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস, উপদপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য এস এম কামাল হোসেন, ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া উপস্থিত ছিলেন।
আন্দোলনকারীদের আহ্বায়ক এ কথা বলার পর ‘ভুয়া’, ‘মানি না’, ‘মানব না’ বলে স্লোগান দিতে থাকে বিক্ষুব্ধ সাধারণ আন্দোলনকারীরা।
শিক্ষার্থীরা বলে, আগামী মাসে অধিকাংশ শিক্ষার্থীর পরীক্ষা। শুরু হবে রমজান মাস। এই পরিকল্পনা মাথায় নিয়ে মুলা ঝুলিয়েছে সরকার। তারা সিদ্ধান্ত মানবে না। কোটা সংস্কারের জন্য প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে।
কোটা সংস্কার আন্দোলনের কর্মী কানিজ ফাতেমা, আফসানা সাফা, একরামুল হক, আল ইমরান হোসাইন, লীনা মিত্র, আরজিনা হাসান, লুবনা জাহান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।