রাজধানীর অন্যতম ব্যস্ত এলাকা পান্থপথ মোড়। মোড়ের ঠিক কাছাকাছি চারতলা ভবনটি হোটেল ওলিও ইন্টারন্যাশনাল। ভবন থেকে ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি ভবনের দূরত্ব আধা কিলোমিটারের ও কম।
ব্যাস্ত পান্থপথ মোড় আজ মঙ্গলবার সাত সকালে থমথমে হয়ে যায়। আশপাশের লোকজন, বিপুলসংখ্যক সংবাদকর্মী—সবার দৃষ্টি ওলিও হোটেলের দিকে। সবার মনের মধ্যে কী হবে, কী হবে—এমন একটি অবস্থা।
ওলিও হোটেলে জঙ্গি আস্তানা রয়েছে এমন তথ্য পেয়ে সোমবার মধ্যরাত থেকে পান্থপথের স্কয়ার হাসপাতালের পাশের ওলিও নামের হোটেলটি ঘিরে রাখে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।মঙ্গলবার সকালে পুলিশ সদস্যরা ওই এলাকার প্রতিটি গলি এবং বিভিন্ন ভবনের ছাদে অবস্থান নেন, সোয়াট সদস্যরা অভিযানের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন। একপর্যায়ে ফায়ার সার্ভিসের কয়েকটি ইউনিট ও একটি অ্যাম্বুলেন্স এসে যোগ দেয় সেখানে। অভিযানের নাম দেয়া হয় ‘অপারেশন অগাস্ট বাইট’। যখন সকাল সাড়ে নয়টা পেরিয়ে পৌনে দশটা ছুঁই ছুঁই করছে। ঠিক তখনই আচমকা বেশ কয়েকবার গুলি শব্দ। সময় তখন ৯টা ৪৪ মিনিট। গুলির শব্দ শুনে , সবাই যখন কী হলো, কেন হলো? তখনই বিকট শব্দ। শব্দ ছড়িয়ে যেতে না যেতেই হোটেলটি চারতলার দেয়ালের বড় অংশ ধসে পড়ে সড়কে ওপর। তবে বিস্ফোরণে কারণে ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে যায় ওলিও হোটেলটির সামেনর অংশ। কেবল বিস্ফোরণই নয়, মুহুর্মুহু গুলি চলতে থাকে। সঙ্গে সঙ্গে ছুটোছুটি শুরু হয়ে যায়। টানা ১৫ সেকেন্ড গুলি চলে। কে গুলি করছে? কারা করছে? কিছুই বোঝা যাচ্ছিল না। ৯টা ৪৫ মিনিটে শুরু হওয়া বিস্ফোরণ আর গোলাগুলির পর মিনিট ২ বিরতি। এরপর আবার ফের গুলির শব্দ।
এক পর্যায় গোলাগুলি থেমে যাওয়ার কিছুক্ষণ পর আহত অবস্থায় এক যুবককে নিয়ে যাওয়া হয় স্কয়ার হাসপাতালে। ব্রিফিং করেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজি) শহীদুল হক, এ সময় তিনি বলেন, ‘এই জঙ্গির তথ্য প্রাথমিকভাবে আমরা পেয়েছি। তার নাম সাইফুল ইসলাম। তার বাড়ি খুলনার ডুমুরিয়ায়। তার বাবা একটি মসজিদের ইমাম। সে মাদ্রাসার ছাত্র ছিল, খুলনার বিএল কলেজেরও ছাত্র ছিল এবং ছাত্রশিবির করত।’
সাইফুল ইসলামের আজ ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে মিছিলে হামলার পরিকল্পনা ছিল বলেও জানান আইজি শহীদুল হক।