Home বাংলাদেশ বিপৎসীমার ৪১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে “ধরলার পানি” !!!

বিপৎসীমার ৪১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে “ধরলার পানি” !!!

1941
0
SHARE
dhorola river

টানা বৃষ্টি ও উজানের ঢলে কুড়িগ্রামের ধরলা, তিস্তা, ব্রহ্মপুত্রসহ সবকটি নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। সেতু পয়েন্টে ধরলা নদীর পানি বিপৎসীমার ৪১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

পানিবন্দি হয়ে পড়েছে এসব এলাকার লক্ষাধিক মানুষ। পানি বৃদ্ধির কারণে প্লাবিত হয়ে পড়েছে নাগেশ্বরী, ভুরুঙ্গামারী, কুড়িগ্রাম সদর, ফুলবাড়ী, চিলমারী, রৌমারী, রাজীবপুর ও উলিপুর উপজেলার নিম্নাঞ্চলের ৫০ ইউনিয়নের প্রায় দুই শতাধিক গ্রাম।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সদর উপজেলার ভোগডাঙ্গা ইউনিয়নের কুমরপুর এলাকায় কুড়িগ্রাম-ভুরুঙ্গামারী সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় যেকোনো মুহূর্তে জেলা শহরের সঙ্গে নাগেশ্বরী, ভুরুঙ্গামারী ও ফুলবাড়ী উপজেলার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ ছাড়া গ্রামীণ কাঁচা ও পাকা সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় এসব এলাকার যোগাযোগব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। তলিয়ে গেছে এসব এলাকার গ্রামীণ হাট-বাজারগুলো। জেলার ৫০ ইউনিয়নের রোপা আমনসহ মৌসুমি ফসলও তলিয়ে গেছে। বন্যার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় মানুষজন ঘরবাড়ি ছেড়ে বাধ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও পাকা সড়কে আশ্রয় নিচ্ছে।

সদর উপজেলার ভোগডাঙ্গা ইউনিয়নের কুমরপুর এলাকার সত্তর বছরের বৃদ্ধ নছিয়ত আলী বলেন, ‘শুক্রবার রাত থেকে ধরলার পানি প্রবল বেগে বৃদ্ধি পাওয়ায় ঘরবাড়ি তলিয়ে গেছে। বাড়িতে থাকতে না পেরে ছেলেমেয়ে, গরু-ছাগলসহ মাদ্রাসায় আশ্রয় নিয়েছি। ওই মাদ্রাসার মাঠও তলিয়ে গেছে। যে হারে পানি বাড়ছে তাতে মনে হচ্ছে, এখানেও আর থাকা যাবে না।

স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শফিকুল ইসলাম জানান, গত ১৮ ঘণ্টায় সেতু পয়েন্টে ধরলা নদীর পানি ৫৭ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৪১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। চিলমারী পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্রের পানি ৫৮ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ১৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বেড়েছে তিস্তাসহ অন্যান্য নদীর পানিও।

নাগেশ্বরী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু হায়াৎ মো. রহমতুল্লাহ জানান, নাগেশ্বরী পৌরসভার একাংশসহ ১০টি ইউনিয়নের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা খন্দকার আলাউদ্দিন আল আজাদ জানান, জেলায় ২৫টি মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্যার পানিতে তুলিয়ে যাওয়ায় শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা স্বপন কুমার রায় চৌধুরী জানান, জেলায় ৪৪টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পানি ওঠায় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

জেলা প্রশাসক আবু ছালেহ মোহাম্মদ ফেরদৌস খান জানান, শক্রবার থেকে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। বন্যা মোকাবিলায় মাঠপর্যায়ে ইউএনও ও ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যানদের পানিবন্দি মানুষজনের পাশে দাঁড়াতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

‘জেলা প্রশাসক বলেন, ‘বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। আমাদের কাছে পর্যাপ্ত ত্রাণ রয়েছে। যেখানে যা প্রয়োজন তা দেওয়া হবে।’

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.