Home বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারের ওপর চাপ প্রয়োগের আহবান প্রধানমন্ত্রীর

রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারের ওপর চাপ প্রয়োগের আহবান প্রধানমন্ত্রীর

2095
0
SHARE

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাখাইন থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের স্বদেশে ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমার সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগের জন্য কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোর সংসদ সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
রোববার সকালে রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউয়ে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারি কনফারেন্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত বিশ্ব নেতাদের উদ্দেশে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর অমানবিক নির্যাতন এবং তাদের দেশ ছাড়তে বাধ্য করা শুধু এ অঞ্চলে নয়,এর বাইরেও অস্থিরতা তৈরি করছে। মিয়ানমার সরকারের এমন আচরণের জন্য সেখান থেকে ৬ লাখ ২২ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। ১৯৭৮ সাল থেকে বিভিন্ন সময়ে আসা আরও প্রায় ৫ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অবস্থান করছে।’
নাফ নদী পার হয়ে বাংলাদেশে আসছে রোহিঙ্গারা
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশে একটি দারিদ্র্য ও ক্ষুধামুক্ত, অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক সমাজ গড়ে তোলার জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। জাতীয় সংসদ, বিভিন্ন স্তরের স্থানীয় সরকারসহ আমরা গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করেছি। গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার অতন্দ্র প্রহরী স্বাধীন ও শক্তিশালী গণমাধ্যম। বিগত বছরগুলোতে বাংলাদেশের গণমাধ্যম ব্যাপকভাবে বিকশিত হয়েছে, নিশ্চিত করা হয়েছে তাদের (গণমাধ্যম) অবাধ স্বাধীনতা। মানুষের তথ্যপ্রাপ্তির অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। ইউনিয়ন পর্যায় থেকে শুরু করে উপজেলা, পৌরসভা, সিটি করপোরেশন ও জেলা পরিষদে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিগণ দায়িত্ব পালন করছেন। নারীর ক্ষমতায়ন ও লিঙ্গ বৈষম্য নিরসনে আমাদের অবস্থান দক্ষিণ এশিয়ায় শীর্ষে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের মূল লক্ষ্য গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার ভিত শক্তিশালী করার মাধ্যমে ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলা। সে লক্ষ্যে আমরা রূপকল্প-২০২১ প্রণয়ন করি। সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার ভিত্তিতে আমরা আমাদের কর্মসূচিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়— এই নীতির ভিত্তিতে আমাদের পররাষ্ট্র নীতি পরিচালিত হয়। বিশেষ করে প্রতিবেশি দেশসমূহের সঙ্গে আমরা সব সময়ই সুসম্পর্ক জোরদার করার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। এর ফলে আমরা ভারতের সঙ্গে গঙ্গা নদীর পানি চুক্তি এবং স্থল সীমানা চুক্তি সম্পাদনের মাধ্যমে দীর্ঘদিনের বিরোধের শান্তিপূর্ণ নিষ্পত্তি করতে পেরেছি। একইভাবে মিয়ানমার এবং ভারতের সঙ্গে সমুদ্রসীমা নির্ধারণ করা সম্ভব হয়েছে।’

বক্তব্য শেষে প্রধানমন্ত্রী ৬৩তম কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারি কনফারেন্সের (সিপিসি) উদ্বোধন ঘোষণা করেন।

সংসদ ভবনে অবস্থিত সিপিএর ঢাকা অফিস জানিয়েছে, বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম সংসদীয় এই ফোরামে কমনওয়েলথভুক্ত ৫২টি রাষ্ট্রের জাতীয় ও প্রাদেশিক সংসদসহ ১৮০টি ব্রাঞ্চ রয়েছে, যার মধ্যে ৪৪টি দেশসহ ১৪৪টি সিপিএ ব্রাঞ্চ এ সম্মেলনে অংশ নিচ্ছে। ১ নভেম্বর থেকেই সম্মেলনে অংশ নিতে ইচ্ছুক সদস্য দেশের স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার ও সাংসদরা ঢাকা আসতে শুরু করেন। বর্তমান কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোর স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার, সংসদ সদস্য, অন্যান্য প্রতিনিধিসহ সাড়ে পাঁচশ’র মতো প্রতিনিধি ঢাকায় অবস্থান করছেন। তাদের মধ্যে ৫৬ স্পিকার ও ২৩ জন ডেপুটি স্পিকার রয়েছেন।

গ্রেট ব্রিটেনের রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ সিপিএর প্যাট্রন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি বাণী পাঠিয়েছেন। ২০১৭ সালের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সিপিএর ভাইস প্যাট্রন। ২০১৪ সাল থেকে সিপিএর বর্তমান চেয়ারপারসন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। তিনিই সিপিএর শতবর্ষের ইতিহাসে এই পদে প্রথম নারী। এবারের সম্মেলনে তিনি বিদায় নিচ্ছেন এবং ৭ নভেম্বর নির্বাহী কমিটির নতুন চেয়ারপারসন পেতে যাচ্ছে সিপিএ।

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.