সামরিক শক্তিতে বাংলাদেশের অবস্থান বিশ্বে ৫৭তম। সামরিক বাহিনীর মোট সদস্য সংখ্যা দুই লাখ । বিমান বাহিনীতে বিমানের সংখ্যা ১৬৬টি। বাংলাদেশের ট্যাংক রয়েছে ৫৩৪টি। আছে ৯৪২টি বিভিন্ন ধরনের সাঁজোয়া যান, ১৮টি কামান ও ৩২টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের যান। নৌবাহিনীতে রয়েছে ছয়টি ফ্রিগেট, চারটি করভেট ও দুটি সাবমেরিনসহ ৯১টি তরী। বাংলাদেশের সেনাবাহিনী অনেক দক্ষ। দিন দিন বাড়ছে বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা সমরাস্ত্রের ভান্ডার।
বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি সামরিক বাহিনীর সর্বাধিনায়ক এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় হল প্রধান প্রশাসনিক প্রতিষ্ঠান যেখানে সামরিক আইন তৈরী ও বাস্তবায়ন করা হয়। ভারতীয় উপমহাদেশের অন্যান্য সেনাবাহিনীর মতো ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর আদলে এই বাহিনী সাতটি ডিভিশন নিয়ে গঠিত হয়েছে। অবশ্য এই বাহিনী বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর কৌশলগত পরিকল্পনা কার্যপ্রণালী, প্রশিক্ষণ ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি এবং নন-কমিশনড অফিসার প্রশিক্ষণ পদ্ধতি গ্রহণ করেছে৷ এটি গোলন্দাজ, সাঁজোয়া ও পদাতিক ইউনিট দ্বারা সজ্জিত৷ অধিকন্তু এই বাহিনী, শান্তি-রক্ষী বাহিনী হিসেবে তার সামর্থ্য উন্নত করতে উৎসাহী এবং সেই লক্ষে মার্কিন বাহিনীর সাথে একযোগে কাজ করছে ৷
বর্তমানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সারাদেশে ছড়ানো ২৩টি ব্রিগেডসহ ৭টি পদাতিক ডিভিশনে। এতে একটি আরমার্ড (সাঁজোয়া) ব্রিগেড (২টি সাঁজোয়া রেজিমেন্ট), সাতটি গোলন্দাজ ব্রিগেড, একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ এয়ার-ডিফেন্স গোলন্দাজ ব্রিগেড, একটি ইঞ্জিনিয়ার্স ব্রিগেড, একটি কমান্ডো ব্যাটেলিয়ন এবং দু’টি এভিয়েশন স্কোয়াড্রন আছে।
সশস্ত্র বাহিনীর আধুনিকায়নের জন্য ‘ফোর্সেস গোল-২০৩০’ নামে পাঁচ বছর মেয়াদি চার ধাপের একটি পরিকল্পনা নেয় সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ। প্রথম ধাপে ২০১১ থেকে ২০১৫, দ্বিতীয় ধাপ ২০১৬ থেকে ২০২০, তৃতীয় ধাপ ২০২১ থেকে ২০২৫ এবং চতুর্থ ধাপ ২০২৬ থেকে ২০৩০ সালে বাস্তবায়িত হবে। প্রধানমন্ত্রী এতে অনুমোদনও দিয়েছেন।
আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা দ্য ক্রিশ্চিয়ান সায়েন্স মনিটরের সাময়িকী মনিটর গ্লোবাল আউটলুকের এক প্রতিবেদনে জানায় ২০১৩ সালে রাশিয়ার কাছ থেকে ৮০০ মিলিয়ন ডলার মূল্যের ২৪টি যুদ্ধবিমান বিমান ক্রয়ের চুক্তি করে বাংলাদেশ। পরে রাশিয়া থেকে আরো আটটি বহুমাত্রিক যুদ্ধবিমান কিনে বাংলাদেশ।রাশিয়া এখন হয়ে উঠছে বাংলাদেশের অন্যতম অস্ত্রের যোগানদাতা। বাংলাদেশ রাশিয়া ছাড়াও সাবমেরিন, ক্ষেপণাস্ত্র, হেলিকপ্টার এবং ট্যাংক বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র ক্রয়ের জন্য বেলারুশ ও চীনের সঙ্গে কয়েকটি চুক্তি করেছে।
স্টকহোমভিত্তিক ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের সামরিক ব্যয়ের ডাটাবেজ অনুযায়ী ২০০৮ সালে বাংলাদেশে যেখানে সামরিক ব্যয় ছিলো ১ বিলিয়ন ডলার ২০১২ সালে তা দাঁড়ায় দেড় বিলিয়ন ডলারে। এই পরিমাণ বছর বছর বেড়েই চলছে। বাংলাদেশের সাথে সামরিক সহযোগিতা চুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রহ দীর্ঘদিনের। চীনের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নীত হয়েছে কৌশলগত পর্যায়ে। ভারতও এখন বাংলাদেশের সাথে চাইছে সামরিক কৌশলগত সম্পর্ক। ব্রিটেনসহ ইইউ দেশগুলোও বাংলাদেশের সাথে কৌশলগত সম্পর্ক বৃদ্ধিতে জোর দিচ্ছে।
উল্লেখ্য দেশের সেনানিবাসগুলো হচ্ছে- ১. ঢাকা সেনানিবাস, ঢাকা ২.মিরপুর সেনানিবাস, ঢাকা ৩.সাভার সেনানিবাস, ঢাকা ৪.পোস্তগোলা সেনানিবাস, ঢাকা ৫.চট্টগ্রাম সেনানিবাস, চট্টগ্রাম ৬.যশোর সেনানিবাস, যশোর ৭.রাজশাহী সেনানিবাস, রাজশাহী ৮.বগুড়া সেনানিবাস, বগুড়া ৯. জাহাঙ্গীরাবাদ সেনানিবাস, বগুড়া ১০.সৈয়দপুর সেনানিবাস, নীলফামারী ১১.শহীদ সালাউদ্দীন সেনানিবাস, ঘাটাইল, টাঙ্গাইল ১২. ময়মনসিংহ সেনানিবাস, ময়মনসিংহ ১৩. কাদিরাবাদ সেনানিবাস, নাটোর ১৪. খোলাহাটি সেনানিবাস, দিনাজপুর ১৫. বিএমএ, চট্টগ্রাম ১৬.জালালাবাদ সেনানিবাস, সিলেট ১৭.জাহানাবাদ সেনানিবাস, খুলনা ১৮.কুমিল্লা সেনানিবাস, কুমিল্লা