Home আন্তর্জাতিক আজ রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমারের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই চুক্তি হতে যাচ্ছে

আজ রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমারের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই চুক্তি হতে যাচ্ছে

1451
0
SHARE

রোহিঙ্গাদের রাখাইনে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করতে আজ বৃহস্পতিবার মিয়ানমারের সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ।
রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাতে মিয়ানমারের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের প্রত্যাশা নিয়ে শুরু হয়েছে দু’দিনব্যাপী বাংলাদেশ-মিয়ানমার বৈঠক।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী গতকাল বুধবার নেপিডোতে মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সেলরের দপ্তরের মন্ত্রী চ টিন্ট সোয়ের সঙ্গে আলোচনার পর সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

গত কাল মিয়ানমারের রাজধানী নেইপিদোতে বুধবার (২২ নভেম্বর) সকালে দু’দেশের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে এনিয়ে দীর্ঘ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। তবে কয়েকটি বিষয়ে এখনো
একমত হতে পারেনি দু’দেশ।

গত কাল মিয়ানমারের মধ্যে সচিব পর্যায়ে বৈঠক হয়েছে, আজ বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মন্ত্রী পর্যায়ে বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। বাংলাদেশ চাচ্ছে, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের সুনির্দিষ্ট সময়সীমা
নির্ধারণ করে একটি স্বচ্ছ সমঝোতা। দুই দেশ গত প্রায় দুই মাসে সমঝোতার প্রস্তাব ছয় দফা চালাচালি করেছে।
রাখাইনে ২৫ আগস্ট তল্লাশিচৌকিতে সন্ত্রাসী হামলার জেরে রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমার সশস্ত্র বাহিনীর নৃশংসতা শুরুর পর থেকে গত মঙ্গলবার পর্যন্ত ৬ লাখ ২২ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে
আশ্রয় নিয়েছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আলী আজ বৃহস্পতিবার সকালে মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চির সঙ্গে বৈঠক করবেন। ওই আলোচনার পর রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশ থেকে ফিরিয়ে নেওয়ার
ব্যাপারে সমঝোতা স্মারকটি সইয়ের কথা রয়েছে।

স্মারকটির গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো ধ্যে রয়েছে ২০১৬ সালের অক্টোবরের পর থেকে এ পর্যন্ত আসা রোহিঙ্গাদের ফেরত নাকি বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া প্রায় ১০ লাখের সবাইকে ফিরিয়ে নেওয়া হবে,
ফেরত পাঠানোর আগে রোহিঙ্গাদের পরিচয় যাচাইয়ে জাতিসংঘকে রাখা না রাখা, রাখাইনে ফেরত পাঠানোর পর রোহিঙ্গাদের কোথায় রাখা হবে। এসবের পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাতে
সময়সূচি ঠিক করে দিয়ে কাজ করা এবং এ বিষয়ে দুই দেশ সমঝোতা স্মারক সই করলে প্রত্যাবাসন নিয়ে কোনো ধরনের জটিলতা দেখা দিলে তা নিয়ে তৃতীয় কোনো দেশের সহযোগিতা
চাওয়া যাবে কি যাবে না ইত্যাদি আলোচনায় এসেছে।

এদিকে, ১৯৯২ সালের সমঝোতা বা যৌথ ঘোষণাকে ভিত্তি ধরে রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে নিমরাজি ছিল মিয়ানমার। যাতে দ্বিমত ঢাকার। আবুল হাসান মাহমুদ আলী ইতোপূর্বে বলেছিলেন, ফেরত
পাঠানোর বিষয়ে ১৯৯২ সালের সমঝোতা বর্তমানে গ্রহণযোগ্য নয়।

কক্সবাজারে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের বিষয়ে জাতিসংঘের র‌্যাপিড রেসপন্স টিমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রোহিঙ্গাদের কেউ কেউ মিয়ানমারে ফিরতে চায়। তবে তারা পাঁচটি শর্ত দিয়েছে। সেগুলোর প্রথমটি হলো—তাদের মিয়ানমারের নাগরিকত্ব দিতে হবে। দ্বিতীয় শর্ত হলো, তাদের নাগরিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক অধিকার দিতে হবে। তৃতীয়, তাদের জীবন-জীবিকা বিনষ্টের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। চতুর্থ, রোহিঙ্গাদের মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে সম্পৃক্তদের বিচার হতে হবে এবং পঞ্চম শর্ত, মিয়ানমারে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সুরক্ষা নিশ্চিত করতে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী মোতায়েন করতে হবে। এগুলোর বাইরে আবার অনেকে আনান কমিশনের সুপারিশগুলো বাস্তবায়নকেও শর্ত হিসেবে তুলে ধরেছেন।

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.